সকালেই ঘুম থেকে ওঠে আমি দেখি
চারিদিকে আলোয় সব করে ঝিকিমিকি
পাখি সব করে রব করে কিচিমিচি ।
ব্রাশ হাতে পায়চারি সকালের কাজ
দিবানিশি চিন্তায় কপালেতে ভাঁজ ।
গরম চায়ের জল ফোটে টগবগ
বোকা গিন্নিটা জ্বলেপুড়ে করে বকবক ।
ঝটপট স্নান চটপট সাজ
পড়ে আছে ঢের বেশী ,আপিসের কাজ ।
ট্রেন-বাস, সাইকেল ছুটে চলি তাই
ঠিকঠাক আপিসে পৌঁছানো চাই ।
সাইকেল রাস্তা দারুণ দুরাবস্থা
ইঁট-কাঠ পাথরের সারি
জানিনা কোন মরণফাঁদ নেবে প্রাণ কাড়ি ।
প্রত্যহ ছুটটান স্টেশনে
ঠিক নটা ত্রিশ এ পৌঁছাতে হবে ।
পড়িমরি করি তাই
সাইকেল ছোটে ভাই
পাঁই-পাঁই, বাই -বাই ।
বুকের যন্থটায় ছাড়ে দম সাঁই সাঁই !
চলার পথে দেখি প্রতিদিন
কতই না ঘটনা স্বপ্ন রঙিন ।
কেহ ছোটে ব্যাগ কাঁধে ,কেহ বাঁধে গান
কারো শোকে চোখ রাঙে , সিগারেটে টান ।
কেহ দেখি চোখ বুঁজে গানেতেই বুঁদ
চানাওয়ালা চানাতে দেয় ঝাল-নুন ,
কারোর বা চিন্তায় মুখখানি চুন ।
আমি এক সাদামাটা নিত্য পথিক
সাদামাটা হলেও তো পথ চলি ঠিক ।
দেখি যত দুনিয়ায় নিত্যরূপ
সকলেই ব্যস্ত নৃত্যের ধূম ।
সর্বদা ব্যস্ত ফেসবুক চ্যাট
খোকাখুকি ব্যস্ত নিয়ে টমক্যাট ।
দুখী -সুখী মনটা অসহায়তায়
ফেসবুক চ্যাটেতে সহমত চায় ।
চোখে-চোখে অহরহ লাল নীল পদ্ম
কামরার কোণে বসে হাসে পাগলাটে শম্ভু ।
প্রত্যহ দেখে দেখে সহে গেছে সব
ভাবুক পাগল -মন করে বক্ বক্ ।
প্রত্যহ দেখি এক পাগলাটে বুড়ো
স্টেশনে বেচে কলা-মূলো ।
বাজার যেমনি থাক বেশ হাসি-খুশি
এককালে সেই নাকি ছিল বড় চাষী ।
একদিন ঘটে গেল অযাচিত কিছু
ভাবিনি কল্পনায় শনি ছিল তার পিছু ।
আপিসের আপট্রেন বেশ হুড়োহুড়ি
ডাউনে বুড়ো আনে শাক- সব্জি ।
ডানদিকে খোলা পেয়ে নিল তুলে ঝাঁকা
নিমেষে আপট্রেন দিল কোষে এক ধাক্বা ।
রুকাসুখা প্রাণ তার রক্তাত শরীর
থরথরিয়ে কাঁপে বুক কাঁপে থিরথির ,
উৎসুখ যাত্রী ধুকপুক বুক
ব্যস্ত সমস্ত ফোন ক্যামেরার লুক ।
হেঁসে-বেঁকে কারা কত তুলছে ছবি
দিয়ে দেবে ফোনবুক-ফেবুতে কিবা বাহাদুরী !
ভিড় ঠেলে এলো চলে , প্রবীণ এক শিক্ষক
কাঁপা কাঁপা হাত ছোঁয়ালো বৃদ্ধের কপালের উপর
কাঁপা-কাঁপা স্বর তার গেল জড়িয়ে
কোমল করুণ সুর বাজে একতারে ।।
---------------এ এফ এম বাইতুল্লা
০৩/০৮/২০১৮
No comments:
Post a Comment